ভিসি কোটা বাতিলসহ চার দাবিতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে মানববন্ধন
জাবি প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯:২৪
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) ভিসি কোটা বতিলসহ মোট চার দফা দাবিতে মানববন্ধন করেছে জাবি শিক্ষার্থীরা।
রোববার (৮ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে এগারোটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসনিক ভবনের সামনে মানববন্ধন করেছে "গণঅভ্যুত্থান রক্ষা আন্দোলন" জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়।
মানববন্ধনে নগর ও অঞ্চল–পরিকল্পনা বিভাগের ৪৮তম ব্যাচের শিক্ষার্থী শোয়াইব হাসানের সঞ্চালনায় সরকার ও রাজনীতি বিভাগের ৫০তম ব্যাচের শিক্ষার্থী জিয়া উদ্দিন, ইতিহাস বিভাগ ছাত্র সংসদের সহসভাপতি (ভিপি) শাকিল আলী, সরকার ও রাজনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম, গণ-অভ্যুত্থান রক্ষা আন্দোলনের আহ্বায়ক আবদুর রশিদ প্রমুখ বক্তব্য দেন।
দাবিগুলো হলো, ভিসি কোটা বাতিল করতে হবে, পোষ্য কোটার যৌক্তিক সংস্কার করতে হবে, অভিন্ন প্রশ্নপত্রে ভর্তি পরীক্ষা নিতে হবে এবং ভর্তি পরীক্ষার সময় যে অতিরিক্ত আবেদন ফি নেয়া হয় তা কমাতে হবে।
আব্দুর রশিদ জিতু বলেন, ‘জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিন ধরে বৈষম্যমূলক কোটা ব্যবস্থার বিরুদ্ধে আন্দোলন করে আসছে। যদিও প্রশাসন আমাদের মৌখিকভাবে আশ্বাস দিয়েছে, তারা এখনো কোনো প্রজ্ঞাপন জারি করেনি। কোটা ব্যবস্থার বিরুদ্ধে আমাদের আন্দোলন এখনো চলছে এবং ভবিষ্যতেও চলবে। এটা আমাদের জন্য বিব্রতকর যে, গণঅভ্যুত্থানের মতো বড় ঘটনা ঘটার পরও আমাদের কোটা বাতিলের দাবিতে রেজিস্ট্রার ভবনের সামনে এসে দাঁড়াতে হয়। আমরা প্রশাসনকে স্পষ্ট করে জানাতে চাই, যদি আজকের পরেও এই দাবিতে আমাদের রেজিস্ট্রার ভবনের সামনে আসতে হয়, তাহলে আমরা গণঅভ্যুত্থানের ফসল হিসেবে গড়ে ওঠা এই প্রশাসনের বিরুদ্ধেও কঠোর আন্দোলন শুরু করতে বাধ্য হব।’
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী শাকিল বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য কোনো রাজা, কর্তা বা মালিক নন, তাহলে তার নামে কোটা থাকা উচিত নয়। আমরা দেখেছি, কিছু মানুষ সম্পর্কের জোরে বা একটি বার্তার মাধ্যমেই এখানে ভর্তি হতে পারে। ভিসি কোটা একটি সম্পূর্ণ অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক ব্যবস্থা। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসি কোটার কোনো প্রয়োজন নেই। একজন শিক্ষক বা উপাচার্যের সন্তান কোনোভাবেই বঞ্চিত নয়। যদি কোটা থাকতে হয়, তবে তা শুধুমাত্র প্রতিবন্ধীদের জন্য হওয়া উচিত। আমরা মাননীয় উপাচার্য মহোদয়ের প্রতি আহ্বান জানাই, দ্রুত ভিসি কোটা বাতিল করুন এবং পোষ্য কোটার যৌক্তিক সংস্কার করুন।’
সরকার ও রাজনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী জিয়াউদ্দীন আয়ান বলেন, আমরা বৈষম্যহীন একটা বাংলাদেশের জন্য লড়াই চালিয়ে গিয়েছি, এখন অবধি আমরা লড়াই চালিয়ে যাচ্ছি। বাংলাদেশের চারটি স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে জাহাঙ্গীরনগর ছাড়া কোথাও ভিসি কোটা নেই। প্রতিবছর এই অথর্ব ভিসি কোটায় ২০ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হয়ে থাকে। প্রতি বছর প্রায় ৩০০ শিক্ষার্থী বিভিন্ন ধরনের কোটার মাধ্যমে ভর্তি হয়ে থাকে। নুন্যতম পাশ মার্ক পেয়ে তারা ভর্তি হয়ে থাকে, যেখানে অনেক মেধাবী বঞ্চিত হয়। আমরা চাই পোষ্য কোটার যৌক্তিক সংস্কার করা হোক এবং অথর্ব বিসি কোটা বাতিল করা হোক।
বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষার আবেদনের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। আবেদন কার্যক্রম আগামী ১ জানুয়ারি শুরু হয়ে চলবে ২১ জানুয়ারি পর্যন্ত। এবারের পরীক্ষায় বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নাতি-নাতনি কোটা বাতিল করা হয়েছে।
বাংলাদেশ জার্নাল/এমপি